*************************
প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কার
(ক) প্রধানমন্ত্রী পদে মেয়াদসীমা:
-
কেউ যেন দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন – এই বিধান সংযুক্ত করা।
(খ) চার বছর অন্তর সংসদ নির্বাচন:
-
গণতান্ত্রিক গতিশীলতা বাড়াতে নির্বাচন পাঁচ নয়, চার বছর পরপর হোক।
(গ) বিচার বিভাগের স্বাধীনতা:
-
বিচারকদের নিয়োগ, বদলি ইত্যাদি জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে করতে হবে।
-
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগই কমিশন গঠন করবে।
(ঘ) সরাসরি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন:
-
জনগণের সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ব্যবস্থা।
(ঙ) সংখ্যানুপাতিক ভোট ব্যবস্থা:
-
৩০০ সদস্যের পুরনো পদ্ধতির সঙ্গে ১০০ সদস্যের সংখ্যানুপাতিক উচ্চকক্ষ সংযুক্ত করা।
(চ) নারীর অংশগ্রহণ:
-
৫০ রিজার্ভ সিট বাদ দিয়ে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধি নিশ্চিত করা।
(ছ) তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল:
-
তবে এতে বিচার বিভাগ জড়িত না রেখে নিরপেক্ষ পদ্ধতিতে উপদেষ্টা নিয়োগ নিশ্চিত করা।
(জ) সংবিধান পুনর্লিখন কমিশন ও গণভোট:
-
সংবিধান পুনর্লিখন কমিশন গঠন করে সব প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়ে তা গণভোটের মাধ্যমে অনুমোদন।
******************
সরকারি কর্মচারী আচরণবিধিমালা অনুযায়ী সম্পদের হিসাব দেওয়ার নিয়ম
🔷 মূলনীতি:
সরকারি কর্মচারী আচরণবিধিমালা, ১৯৭৯ (সংশোধিত ২০২২) অনুযায়ী—
➤ প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে
1️⃣ চাকরিতে যোগদানের সময়
2️⃣ এরপর প্রতি ৫ (পাঁচ) বছর অন্তর
নিজের ও নির্ভরশীলদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারকে জমা দিতে হয়।
🔷 উদ্দেশ্য:
✅ সরকারি কর্মচারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা
✅ দুর্নীতি প্রতিরোধ করা
🔷 বর্তমান নির্দেশনা:
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্দেশ দিয়েছে—
➤ প্রতি বছর ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পদের হিসাব জমা দিতে হবে।
🔷 গোপনীয়তা:
✔️ জমাকৃত সম্পদের হিসাব একটি স্বীকৃত খামে গোপনীয়ভাবে জমা দিতে হয়।
✔️ এটি তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর আওতায় পড়ে না।
❗ তবে কারও বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা বা মামলা হলে, তখন সেই তথ্য গোপন থাকে না।
***************************
সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা – সংক্ষেপে বিশ্লেষণ
🔹 আইনি ভিত্তি:
ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮-এর ধারা ১২(১) অনুযায়ী সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সীমিত সময়ের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়।
🔹 ক্ষমতার সময়সীমা:
👉 ৬০ দিন (২ মাস)
🔹 কারা এই ক্ষমতা পায়:
👉 সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
🔹 যে ১৭টি ধারা এক্সিকিউট করতে পারবে:
-
গ্রেপ্তার, পরোয়ানা, তল্লাশি: ধারা ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০৫
-
মুচলেকা ও নিরাপত্তা: ধারা ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬
-
জনশৃঙ্খলা: ধারা ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩, ১৪২
🔹 ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:
-
২০০১: বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার দাবি করে, কিন্তু তা নাকচ হয়।
-
২০০২: বিএনপি সরকার ৮৪ দিনের জন্য সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেয়, চালু হয় অপারেশন ক্লিনহার্ট, ১২ হাজার গ্রেপ্তার, ৪০ জন মৃত্যুবরণ।
পরে দায়মুক্তি অধ্যাদেশ ২০০৩ জারি করে সেনাবাহিনীকে ক্যাম্পে ফেরানো হয়।
-
২০১০: আওয়ামী লীগ আরপিও (RPO) থেকে সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞা থেকে বাদ দেয়।
🔹 মূল বিষয়:
এই ক্ষমতা অসামরিক শাসনের আওতায় সেনাবাহিনীকে বিশেষ প্রশাসনিক ক্ষমতা দেয়, যা সংবেদনশীল এবং বিতর্কিত। অতীতে এ ক্ষমতার ব্যবহার ও অপব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক রয়েছে।
সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (Commissioned Officer) বলতে বোঝানো হয় সেই সব সেনা কর্মকর্তাদের, যারা সরকার বা রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে কমিশন লেটার (Commission Letter) পেয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন এবং একটি নির্দিষ্ট পদমর্যাদায় নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
🔹 কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পদসমূহ (বাংলাদেশ সেনাবাহিনী):
-
সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট / লেফটেন্যান্ট
-
ক্যাপ্টেন
-
মেজর
-
লেফটেন্যান্ট কর্নেল
-
কর্নেল
-
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল
-
মেজর জেনারেল
-
লেফটেন্যান্ট জেনারেল
-
জেনারেল (Army Chief)
👉 এরা সরাসরি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি (BMA) থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে কমিশন লাভ করেন এবং বিভিন্ন ইউনিট, ব্রিগেড, বা ডিভিশনের নেতৃত্ব দেন।
🔸 কমিশনপ্রাপ্ত না হলে কে হন?
নন-কমিশনড অফিসার (NCO) যেমন: সার্জেন্ট, ওয়ারেন্ট অফিসার, করপোরাল ইত্যাদি, যারা সাধারণত ফোর্সে থেকে প্রমোশনের মাধ্যমে পদ লাভ করেন কিন্তু কমিশনধারী নন।
*******************************
সরকারের গঠন
- আইন বিভাগ – আইন প্রণয়ন করে।
- নির্বাহী বা শাসন বিভাগ – আইন বাস্তবায়ন করে।
- বিচারবিভাগ – অপরাধের শাস্তি প্রদান করে, জনগণের অধিকার রক্ষা করে।
নির্বাহী বিভাগের কাঠামো:
রাষ্ট্রপতি: সংবিধানের ৪৮ তম অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির কথা উল্লেখ রয়েছে। ৫৫ তম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে রাষ্ট্রের সকল আদেশে রাষ্ট্রপতির নামে গৃহীত হবে।
প্রধানমন্ত্রী: সংবিধানের ৫৫ ও ৫৬ অনুচ্ছেদে প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রী পরিষদের কথা বলা আছে। ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের আমলের সংবিধানের ১২ তম সংশোধনীর মাধ্যমে আমরা রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের থেকে প্রধানমন্ত্রী শাসিত সরকারে ফেরত এসেছি।
সংবিধানের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ:
৪৮ রাষ্ট্রপতি দেশের অলংকারিক প্রধান। সবকিছুতে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিয়ে কাজ করবেন।
৪৯ ক্ষমা প্রদর্শন করতে পারবেন।
৫৫ রাষ্ট্রপতি দেশের প্রধান নির্বাহী
৫৫ ৫৬ শাসন বিভাগের জবাবদিহিতা
৫৯ ৬০ স্থানীয় প্রশাসন
৬৪ অ্যাটর্নি জেনারেল
১৫ রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব বর্ণনা করা হয়েছে।
- খাদ্য বস্ত্র আশ্রয় শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে।
- যুক্তিসঙ্গত মজুরের বিনিময়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে।
- যুক্তিসঙ্গত বিশ্রাম বিনোদন এবং অবকাশের ব্যবস্থা করবে।
- সামাজিক নিরাপত্তার বিধান করবে।
বাংলাদেশের এটর্নী জেনারেল কি নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তা না বিচার বিভাগের?
বাংলাদেশের অ্যাটর্নী জেনারেল নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তা।
সংবিধানের ৬৪(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তিনি নিযুক্ত হন এবং রাষ্ট্রপতির সন্তুষ্টির উপর নির্ভর করে তার পদে বহাল থাকেন।
তিনি মূলত সরকারকে আইনি পরামর্শ প্রদান করেন এবং আদালতে সরকারের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন। এই কাজগুলো নির্বাহী বিভাগের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।
যদিও অ্যাটর্নী জেনারেলকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হওয়ার যোগ্য হতে হয় এবং তিনি সকল আদালতে সরকারের পক্ষে আইনি যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের অধিকার রাখেন, তবুও তিনি বিচার বিভাগের অংশ নন। তার নিয়োগ এবং কার্যকাল নির্বাহী বিভাগের উপর নির্ভরশীল।