কর্ণফুলী টানেল সাদা হাতি নাকি সম্ভাবনা।

চট্টগ্রাম নগরীর দক্ষিণ দিকে কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে পতেঙ্গা এবং আনোয়ারা কে যুক্ত করে নির্মিত হয়েছে কর্ণফুলী টানেল। ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই টানেলের জন্য ৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে চায়না এক্সিম ব্যাংক থেকে। ঋণের টাকা চলতি বছরের থেকেই পরিশোধ করা শুরু হবে।

পরিচালন ব্যয়ের তুলনায় রাজস্ব আদায় অত্যন্ত কম হওয়ায় এই টানেলের কার্যকারিতা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই এটিকে একটি সাদা হাতি প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। কেননা টানেল এর জন্য প্রাক্কলন করা হয়েছিল যে প্রতিদিন প্রায় ১৮ হাজার গাড়ি চলবে সেখানে চলছে প্রায় মাত্র চার হাজার গাড়ি। টানেলের প্রতিদিন পরিচালন ব্যয় হচ্ছে ৩৫ লাখ টাকা যেখানে রাজস্ব আসছে মাত্র ৭-৮ লাখ টাকার মত। ফলে টানেলের অর্থনৈতিক উপযোগিতা নিয়ে প্রশ্ন করার সুযোগ রয়েছে।

তবে এটিও নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে এই টানেল চট্টগ্রামের দক্ষিণ অংশ এবং কক্সবাজার জেলার জন্য অমিত সম্ভাবনার দার খুলে দিয়েছে। চট্টগ্রাম শহর বলতে আমরা যা বুঝি সেটি আসলে কর্ণফুলী নদীর উত্তর অংশে। যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে চট্টগ্রাম শহর কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ অংশে খুব বেশি বিস্তারিত হতে পারেনি। এখন সুযোগ তৈরি হয়েছে শহরকে , বাণিজ্যিক এবং আবাসিক এলাকাকে চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিণ অংশ বিস্তার করার।

কয়েকটি কাজ করা যেতে পারে –  চট্টগ্রাম বন্দরের কয়েকটি জেটি যদি নদীর দক্ষিণ অংশে নির্মাণ করা যায় তাহলে দক্ষিণ অংশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বৃদ্ধি পাবে। ইতোমধ্যেই আনোয়ারা কোরিয়ান ইপিজেড এবং চাইনিজ ইপিজেড নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।

আনোয়ারা অবস্থিত পারকি বিচ পর্যটনের জন্য একটি নতুন হটস্পট হতে পারে। সরকার মিরসরাই ইপিজেড থেকে কর্ণফুলী টানেল হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত রোড নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করার জন্য মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের কথা বিবেচনা করছে।

বর্তমানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলেও কর্ণফুলী টানেলের দক্ষিণ অংশে কানেক্টিং রোড ভালোভাবে নির্মাণ করা। মূল কথা হল কর্ণফুলী দক্ষিন অংশে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন যত দ্রুত হবে কর্ণফুলী টানেল তত দ্রুত অর্থনৈতিক সুফল বয়ে আনবে।

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।